You are currently viewing ব্লাক ম্যাজিক (প্রথম পর্ব: কুফরী কালাম)

ব্লাক ম্যাজিক (প্রথম পর্ব: কুফরী কালাম)

  • Post author:

নানা মানুষের নানা মত। ভয় কিংবা শংকা। কেউ কেউ জানে না কিন্তু বিশ্বাস করে। কেউ বিশ্বাস করে, কিন্তু বলতে চায়না। কেউ বলে কিন্তু ভুল বলে। আসলে না জানাটাও একটা সীমাবদ্ধতা আর জানাটাও এক ধরণের দায়। মূলত: এটাকে নিষিদ্ধ ভেবেই আমরা এড়িয়ে চলি। আর জানাই আছে, যা নিষিদ্ধ, তা আকর্ষিত করে খুব সহজেই। ‘ব্লাক ম্যাজিক’ নামক লেখায় আমরা বিভিন্ন ধর্মে, মতে, ঘটনায় এর সরূপ অনুসন্ধান করবো।

প্রথম পর্ব: কুফরী কালাম

“বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি প্রভাতের পালনকর্তার, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন, তার অনিষ্ট থেকে, আর অন্ধকার রাত্রির অনিষ্ট থেকে, যখন তা সমাগত হয়, এবং গ্রন্থিতে ফুঁৎকার দিয়ে জাদুকারিনীদের অনিষ্ট থেকে” (সুরা ফালাক, ১-৪)

আল কোরআনের এই আয়াত থেকেই বুঝা যায়, জাদু বা কুফরী কালামের অস্তিত্ব আছে।

কুরআনে পরিষ্কারভাবে কিছু বিশেষ ধরনের জাদুর কথা বলা আছে। হাজার বছর আগে বনী ইসরাইল এই ধরনের জাদু ব্যবহার করে নিজেদের পরিবার এবং সমাজ ধ্বংস করে গেছে। আজকের যুগেও এই ধরনের জাদুটোনা অহরহ ব্যবহার হচ্ছে। যদিও পত্রিকায় যেসব বিজ্ঞাপন দেখা যায়, যেখানে নারী বশীকরণ, স্বাস্থ্য উদ্ধার, প্রেমে সফলতা, বিদেশে চাকরির নিশ্চয়তা ইত্যাদি সমস্যার সমাধানে নানাধরনের জাদুর ব্যবহার দেখা যায়, তবে এগুলোর প্রায় সবই ভূয়া। জাদুর মাধ্যমে মানুষের সমস্যার সমাধান তো দূরের কথা, উল্টো ঈমান ধ্বংস করে দুনিয়া এবং আখিরাতের জীবনকে ধ্বংস করে ফেলা ছাড়া আর কিছুই হয় না।
মানুষ যখন আল্লাহর কিতাবকে ভুলে যায়, তখন তারা এই সব দুই নম্বরী পদ্ধতি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। পীর ধরা, বান মারা, জাদুটোনা করা — এই সব চাহিদা মানুষের মধ্যে তখনি আসে, যখন তার জীবনে কুরআনের শিক্ষা, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস এবং আল্লাহর সিদ্ধান্তের উপর আস্থা — এসব কিছু হারিয়ে যায়। তখন সে তার দুর্বিষহ জীবন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে এইসব জঘন্য পদ্ধতির আশ্রয় নেয়। কিন্তু এগুলো করে তার জীবনে সমস্যা দূর হওয়া তো দুরের কথা, সে তার জীবনকে আরো দুর্বিষহ করে ফেলে এবং আল্লাহর প্রতি কুফরী করে চিরস্থায়ী জাহান্নামী হয়ে যায়।

কুফরি যাদু কি: কুফরি যাদু যা আরো কয়েকটি নামে পরিচিত। যেমন: কালো যাদু, ব্লাক ম্যাজিক, বান মারা, তাবিজ করা ইত্যাদি। তবে আমাদের দেশে ‘বান মারা’ কথাটিই বেশি প্রচলিত এবং সাধারনত গ্রাম-অঞ্চলে এই ব্যাপারটি বেশি ঘটে থাকে। খারাপ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে অন্যের অনিষ্ট করাই হল বান মারা, আর যেহেতু আল্লাহর হুকুমের বাইরে অপশক্তিকে কাজে লাগিয়ে কাজটি করা হয় তাই একে কুফরি যাদু বলা হয়।

এই মহাবিশ্বের সবকিছুই একমাত্র মহান আল্লাহর সৃষ্টি এবং তিনিই সকল ক্ষমতার উৎস। আমরা একমাত্র তারই এবাদত করি। কিন্তু আমাদের সমাজে কিছু কিছু মানুষ আছে যারা শয়তানের পুজারী, শয়তানের ইবাদত করে। শয়তানকে খুশি করে তারা নানা রকমের কাজ হাসিল করে নেয়। আর শয়তান মানে কেবল ইবলিশ শয়তান নয়। তার অনেক অনুসারী আছে যারা খারাপ জিন। আর আমরা জানি যে, জিনেরা জন্মগতভাবে আল্লাহ প্রদত্ত কিছু বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী হয়ে থাকে। তো এই বিশেষ ক্ষমতাকেই খারাপ কাজে ব্যাবহার করা হয়।

তাহলে ব্যাপারটি দাঁড়াচ্ছে, আল্লাহ আদেশ না মানলে বা আল্লাহ যে কাজগুলি নিষেধ করেছেন, সেগুলিই করলে শয়তান সবচেয়ে বেশি খুশি হয়। তাই কুফরি যাদু করার সময় বলি দেওয়া, আগুন পুজা করা, শয়তানকে মনে প্রাণে ভক্তি ভরে ডাকার মতো ঘটনা ঘটে। এতে আল্লাহ হুকুম বরখেলাপ হয় এবং শয়তান খুশি হয়। শয়তান খুশি হয়েই তার অনুগত জিনদের দ্বারা কাজ করিয়ে দেয়। আবার অনেক সময় মৃত প্রাণীর হাড়, কয়লা বা এই জাতীয় জিনিষ উপহার দিয়ে সরাসরি খারাপ জিনদের দ্বারাও কাজ করানো হয়।
আল্লাহর হুকুমের বাইরে শয়তানের খারাপ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে অন্যের অনিষ্ট করার জন্য খারাপ জিনদের দ্বারা কুফরি কাজ করা হয় এবং হাদিসের ভিক্তিতে এটি অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।
মানুষের অগোচরে শয়তান কর্তৃক সম্পাদিত কাজই হচ্ছে কুফরি যাদু।
আমাদের দেশে কিছু মানুষ আছে যারা টাকার বিনিময়ে জ্বীন, শয়তানকে খুশী করে অন্যের সমস্যার সমাধান বা অন্যের ক্ষতি করে। মূলত এটাই হচ্ছে কুফরি যাদু।

যাদু বহু প্রাচীন কাল থেকে চলে আসা একটি কুফুরী প্রথা। স্বয়ং রাসূলুল্লাহর উপরও ইহুদীরা হিংসা করে যাদু করেছিল। এর মাধ্যমে তাকে পৃথিবীর বুক থেকে চিরদিনের জন্য সড়ানোর ষড়যন্ত্র করেছিল। সূরা নাস, ফালাক্ব দিয়ে তাঁকে ঝাড়ফুঁক করা হয়েছিল। সুলাইমান (আঃ) এর যুগে যাদুর ব্যাপক প্রচলন ছিল। পূর্বে বানী ইসরাইলের মাঝে পরীক্ষার জন্য হারূত ও মারূত নামে দু’জন ফেরেস্তাকে প্রেরণ করা হয়েছিল। কুফুরী যাদু মানুষের উপর খুব ধীর গতিতে প্রভাব ফেলে। যাদুর এ প্রভাব ধীরে ধীরে মানুষের প্রাণ শক্তিতে রুপ নেয়। এ যাদু বিদ্যার মন্ত্র, আচার অনুষ্ঠান ও বিধি নিষেধেরমাধ্যমে বর্বর মানুষগুলো ভাগ্য, দুর্ঘটনা, ভয়, জয়, পরাজয় নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। আজও মানুষ যুক্তি ও বিজ্ঞানের পদ্ধতিতে অনেক বিষয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। ফলে লোক সমাজে নানা বিশ্বাসে যে শেকড় আঁকড়ে আছে। যাদু তার মধ্যে অন্যতম একটি। বিভিন্ন মন্ত্র, সংখ্যা, দুর্বোধ্য লেখা, কখনো আবার কুরআনের আয়াতের অংশ দিয়ে শয়তান কাফের জ্বীনদের সাথে যোগাযোগ করে। ঐ দুর্বোধ্য লেখাগুলোতে মারাত্মক রকমের শিরকি ও কুফুরী কথাবার্তা লেখা থাকে। শয়তান জিনেরা ইবলিসের অনুসারী, আর ইবলিস ও তার অনুসারীদের সাথে আদম (আঃ) ও তার সন্তানদের চিরদিনের শত্রুতা হয়েছিল, যেই দিন থেকে আদম (আঃ) কে সিজদাহ করতে অবাধ্য হয়ে ইবলিস কাফের ও চিরঅভিশপ্ত হয়েছিল। তাই, শিরক ও কুফরী করে কোন মানুষ কাফের হয়ে গেলে, ইবলিস ও তার অনুসারীরা তাকে সাহায্য করে, এই সাহায্যের একটা অংশ হচ্ছে “যাদু”, যা আসলে জ্বীনেরা বিভিন্ন কাজ করে মানুষের উপর প্রভাব বিস্তার করে।

সুত্র: বিভিন্ন আর্টিকেল ও ওয়েব সাইট

#ব্লাকম্যাজিক

#Blackmagic

This Post Has 3 Comments

  1. Shahin Alam

    ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি লিখার জন্য

  2. Ashly Coulter

    Hi everyone, it’s my first pay a visit at this website,
    and post is in fact fruitful in favor of me, keep up
    posting these posts.

    1. Sajeeb

      Thanks

Leave a Reply