প্রলাপ:০২

  • Post author:


ছোটবেলা একটা গল্প শুনেছিলাম। এক লোকের নাম ত্যাড়া, কারণ সে সারা জীবন সব কিছুতে ত্যাড়ামী করে উল্টা কাজ করে। তাকে ডাইনে যাইতে বললে বামে যায়, খাইতে কইলে ঘুমায়, আসতে বললে যায়। যাই হোক, ত্যাড়ায় বিয়ে করলো, তার বউ তার ত্যাড়ামীতে অতিষ্ঠ। বাজার আনতে বললে কসমেটিকস আনে, চাল চাইলে মাছ আনে। একদিন ভোরে নদীর ধারে হাটতে গিয়ে সাতার না জানা ত্যাড়া, পিছলে নদীতে পড়ে। সেই খোজা খুজি। ত্যাড়ার বাবা-মা, বউ বলে স্রোতের উজানে খোজেন, ত্যাড়ায় তো উল্টা চলে। উজানে খুজে খুজে সারা, সন্ধায় ত্যাড়ার লাশ পাওয়া যায় ভাটিতে। লাশ দেখে ত্যাড়ার বউ বলে, ওরে গোলাম, সারা জীবন তো ত্যাড়ামী করলি, মরলি গিয়া ভাটিতে।

দুই মাস ধরে সারা পৃথিবী ব্যাপী ভাইরাসের ব্যাপক আগ্রাসী অবস্থানে বাংলাদেশের হেডামের বড় বড় বানী কপচাইছে। কোটি টাকায় জন্মদিনের পার্টি নিয়ে প্রস্তুতি নিছে। জায়গায় জায়গায় ডিজিটাল বোর্ড লাগাইছে। বিমান বন্দরে স্ক্যানিং মেশিন নাই, ডাক্তারের জন্য পিপিই নাই, ব্যাকাপ প্লান নাই। দেদারসে প্রতিদিন ইতালী, চীন, স্পেন, লেবানন, মালেয়শিয়া থেকে লোক আসছে। এখন যখন সংক্রমণ ধরা পড়ছে, প্রকাশিত ২টা মানুষ আর অপ্রকাশিত সংখ্যায় মরছে, এখন ঘাসের দল বিমান বন্দরে ফ্লাইট বন্ধ করতে আসছে। মানুষকে গৃহে অবস্থা করাইতে আসছে। আরে গর্দভের দল, সময় মত দেশের প্রবেশ সীমাবদ্ধ করলে, এত বড় বিপর্যয় আসতো না। দেশের প্রবেশ আটকাইলে আজ দেশের মানুষকে ঘরে আটকাইতে হইতো না।
নিম্মবৃত্তের জীবন নাভিশ্বাস। ২৫ টাকার পিয়াজ আবার ৯০টাকা, ১৫ টাকার আলু ৪৫টাকা। মাস্ক, স্যানিটাইজার, হেক্সোসল তো তাদের জন্য অলিক কল্পনা।
যেসব নেতার দুই নয়ন, এলাকা বাসীর উন্নয়ন, তাদের নয়নের Mother-father হয়া গেছে। আর ভাইয়ের পক্ষ থেকে সালাম দেয়া চামচারাও উধাও। স্থানীয় কোনো পদক্ষেপ নাই। বাজার মনিটরিং নামমাত্রে। কি ম্যাসাকার আসছে, আল্লাহ ভালো জানেন।
প্রথম মৃত ব্যাক্তিকে আজীমপুরে আঞ্জুমানের তত্বাবধানে নীরব ও ভয়ংকর দাফন হলো। এখন গোলামের ঘরে গোলাম, ত্যাড়ায় ভাটিতে আইছে।

Leave a reply

  • Default Comments (0)
  • Facebook Comments